অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিস-ই-মুশাওয়ারাত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানির কাছে তার কোম্পানির মালিকানাধীন ‘নিউজ ১৮ ইন্ডিয়া’ চ্যানেলের মাধ্যমে মুসলিম বিদ্বেষ প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আবেদন করেছে। আম্বানিকে পাঠানো একটি চিঠিতে মুশাওয়ারাত সভাপতি নাভিদ হামিদ উল্লেখ করেছেন যে তার এই চ্যানেল ‘দেশ নাহি ঝুকনে দেঙ্গে’ শিরোনামে যে ঘৃণামূলক বিতর্কগুলি চালায় তা মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রচারের সমান।

এগুলি রাজনৈতিক– সাংস্টতিক বা সামাজিক বিতর্ক নয়। দুঃখজনকভাবে বিষাক্ত মুসলিম বিরোধী এজেন্ডা মিশ্রিত হয়েছে এতে। হামিদ সতর্ক করে দেন যে বিতর্কটি প্রধানত সাম্প্রদায়িক উসকানি দেবে– সম্প্রদায়গুলির মধ্যে সামাজিক অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করবে। দর্শক ও শ্রোতাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বাড়বে– ক্রমশই উত্তেজনা বাড়বে এবং নিঃসন্দেহে আমাদের মাতৃভূমির শান্তি ও প্রশান্তিকে ধ্বংস করবে। যদি তিনি অবিলম্বে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ না নেন তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

এই মুসলিম নেতা আরও বলেন যে– নিউজ-১৮’এ বিতর্ক শোগুলি প্রকাশ্যে একটি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করছে। সাংবাদিকতার নীতিমালা লঙ্ঘন করছে এবং প্রকৃতপক্ষে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিকৃতি– কুসংস্কার এবং অস্বাভাবিকতায় পূর্ণ। আম্বানির চ্যানেলের বিতর্ক সভাগুলি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বর্ণনায় পূর্ণ উল্লেখ করে হামিদ বলেন যে– মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করাই এর আসল লক্ষ্য।

নাভিদ হামিদ তাঁর পত্রে উল্লেখ করেছেন– মিঃ আম্বানিদের পরিবারে এ ধরনের কোনও রেকর্ড নেই যে তাঁরা বিদ্বেষ প্রচারের সমর্থক হয়েছিলেন কোনও সময়ে। তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে করপোরেট হাউস নিউজ চ্যানেলের মালিকানা লাভ করলেও কিন্তু চ্যানেল পরিচালনা করেন সাংবাদিক ও সম্পাদকরাই।

আর নিউজ-১৮ চ্যানেল কি প্রচার করছে সে সম্পর্কে হয়তো কোনও ধারণাই নেই মিঃ আম্বানির নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতায় তিনি বিশ্বাসী এবং তিনি কখনোই চাইবেন না তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষু হোক। তাই তিনি যেন সাংবাদিকদের যা ইচ্ছা প্রচার করার স্বাধীনতা না দেন। হামিদ তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে গণহত্যা ও গণরোষ তৈরির জন্য প্রচার মাধ্যম দীর্ঘ সময় থেকে প্রোপাগাণ্ডা শুরু করে থাকে। একজন টেররিস্ট অপেক্ষা টিভি চ্যানেলে টেররিজম ছড়ানো আরও ভয়ানক বিষয়।

উল্লেখ্য– মুকেশ আম্বানিদের মালিকানার রয়েছে একাধিক সংবাদ মাধ্যম– বিভিন্ন ভাষায় ৪৩টি চ্যানেল চালু রয়েছে তাঁরই মালিকানায়। কয়েক বছর ধরে আম্বানিরা এই সব সংবাদমাধ্যমের মালিক হয়েছেন। তাদের একটি চ্যানেল নিউজ-১৮’এর মতো অন্যারাও মুসলিম বিদ্বেষ প্রচার শুরু করলে অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিসে মুশাওয়ারাতের সভাপতি নাভিদ হামিদ।